Post Views: 14
দিদারুল আলম:
ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিট নিশ্চিতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বাংলাদেশ প্রবাসী উন্নয়ন সমিতি আহ্বান জানিয়েছে।
বাংলাদেশের প্রবাসী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক শাহ মোহাম্মদ তাইফুর রহমান জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা বরাবর আমরা বিষয়টি নিয়ে আবেদন পেশ করেছি। অন্তবর্তী সরকারের আইন, প্রবাসী কল্যান বৈদেশিক কর্ম সংস্থান মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমরা ইতোমধ্যে একটি আবেদন দিয়েছি।
২০২৩-২০২৪ সালে ইতালি সরকারের দেয়া প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার ওয়ার্ক পারমিটের বিপরিতে অভিবাসন কর্মীর ভিসা প্রাপ্তির লক্ষ্যে ইতালি সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার আশু সমাধানের লক্ষ্যে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আবেদনে বলা হয়েছে-ইতালি সরকারের ঘোষিত ইমিগ্রেশন ডিক্রি ২০২৩-২০২৪-২০২৫ এই তিন।বছরের নির্ধারিত বিদেশী কর্মীদের আইনী প্রবেশের প্রবাহের পরিকল্পনায় প্রদত্ব ৪৫২.০০০ কোটার অধিনে ২০২৪-২০২৫ সালের ইতালিয় মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার বাংলাদেশী কর্মীদের ওয়ার্ক পারমিট তথা N.O.C. বা Nulla Osta প্রদান করে।
ওয়ার্ক পারমিট অধিনে ২০২৪-২০২৫ সালে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ভিসার আবেদন ইতালিয়ান দূতাবাসের ভিসা প্রসেসিং সেন্টার তথা VFS GLOBAL ITALY এর মাধ্যমে আবেদন জমা করা হয়। ইতালির ভিসা নীতির অধিনে ইতালিয় আইনে বলা হয়েছে আবেদন জমার সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে দূতাবাস ভিসার আবেদন নিষপত্তি করবেন।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশী অভিবাসী কর্মী ইতালী সরকারের দেয়া ওয়ার্ক পারমিট হাতে নিয়ে অভিবাসন ভিসার আবেদন জমার জন্য অপেক্ষা করছে এবং ভিসা আবেদন জমা দেয়ার পরে ১২ থেকে ১৪ মাস যাবত ভিসা ডেলিভারির অপেক্ষায়। ইতালি হতে সরকার কর্তৃক কাজের জন্য ভিসার অনুমতি ( N.O.C. বা Nulla Osta) প্রদানের পরেও গত ছয় মাস হতে ১২ মাসের মধ্যে ভিসা আবেদন জমা করার অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যায় না।
আবেদনে আরো বলা হয়, ইতালিয়ান দূতাবাস ও তার অনুমোদিত ভিসা প্রসেসিং সেন্টার VFS GLOBAL কর্তৃক টাকার বিনিময় অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রদান ও ভিসার ডেলিভারি বিষয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি মাধ্যমে শত কোটি টাকা প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে যার কোন সুবিচার কেহ পায়নি। ইতিমধ্যে ইতালীয়ান দূতাবাস ও VFS GLOBAL ভিসা প্রসেসিং সেন্টারের সাথে বার বার যোগাযোগ করার পরেও তারা তাদের কোন কথা রক্ষা করেন নাই। ভিসা প্রদানে কোন অগ্রগতি নেই। একজন অভিবাসী শ্রমিক ১২ থেকে ২৪ মাস পর্যন্ত কাজের অপেক্ষামান থাকা, আয় রোজগার না থাকা, বিদেশে যাত্রার প্রয়োজনে লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পরেও ভিসা না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতি সহ মানবেতার জীবনযাপন করছে।
বাংলাদেশ প্রবাসী উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক শাহ তাইফুর রহমান ছোটন বলেন, সমস্যা গুলির আলোকে বিগত দিনে আমাদের সমস্যা নিরসনের দাবীতে ভুক্তভুগীরা বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে ইতালিয়ান দূতবাসের কাছে সমাধান চাওয়ার পর তারা বিভিন্ন ভাবে আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু কোন সমাধান দিতে পারেনি। ঢাকাস্থ ইতালিয়ান দূতাবাসের ভাষ্য মোতাবেক প্রতিদিন তাদের ভিসা প্রসেসিং এর সক্ষমতা গড়ে ১০০ টি ও মাসে ২৫০০ টি। বর্তমানে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার ভিসা আবেদন প্রসেসিং করতে তাদের প্রায় ২ বছর প্রয়োজন। এমত অবস্থায় আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এই সমস্যা সমাধান করতে হলে ইতালিয়ান দুতবাসে ঢাকায় ১০ গুন সক্ষমতা বাড়াতে হবে। অর্থাৎ ইতালী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ঢাকা দূতবাসে ১০ গুন জনবল প্রেরন করতে হবে। বিষয়টি গত এক বছর যাবত ইতালি সরকারের সিদ্ধান্তহীনতায় ঝুলে আছে যা অত্যান্ত জরুরী ভিত্তিতে সমাধান প্রয়েজেন।
ছোটন বলেন, বর্তমানে ভিসা জমাকৃত ও জমা করার জন্য অপেক্ষমান প্রায় ১০০ থেকে ১১০ হাজার ইতালিতে অভিবাসন প্রত্যাশীর পক্ষ হতে ২০২৩-২০২৪ সালের ইতালি সরকারের দেয়া ওয়ার্ক পারমিটের বিপরিতে অভিবাসন কর্মীদের দ্রুত ভিসা প্রাপ্তির লক্ষ্যে ইতালি ও বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে।